সমাজ কাঠামো পরিবর্তনের অন্যতম উপাদান হলো শিল্পায়ন। যেখানে কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা থেকে সমাজ ক্রমান্বয়ে শিল্প উৎপাদন ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। এ পরিবর্তনের মূলে রয়েছে উৎপাদন ব্যবস্থায় প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির ব্যবহার। শিল্পায়ন সমাজের মধ্যে নিয়ে আসে প্রযুক্তির ছোঁয়া, ফলে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে লক্ষ করা যায় পরিবর্তন। শিল্পায়নের ফলে সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন আসে মানুষের জীবন-জীবিকায়। আর্থসামাজিক প্রক্রিয়ার একটি অংশ হিসেবে শিল্পায়নের উদ্ভাবন ঘটলেও বর্তমান সময়ে শিল্পায়ন শব্দটির সঙ্গে পরিবেশগত শব্দটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত, যেখানেই শিল্পায়ন হচ্ছে সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ। এ শিল্পায়নের গতিতে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশও। বাড়তি জনগণের ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা মেটাতে শিল্প উৎপাদন ব্যবস্থার প্রসার ঘটছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের শিল্প-কারখানা স্থাপিত হচ্ছে। উল্লেখযোগ্য শিল্প হচ্ছে ট্যানারি ও পোশাক। অন্যদিকে স্থাপত্য শিল্পের উন্নতির কারণে নিত্যনতুন স্থাপনার জন্য জোগান দিতে হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের নির্মাণসামগ্রীর। নির্মাণসামগ্রীর মধ্যে অন্যতম উপাদান ইট ও সিমেন্ট। প্রতিটি শিল্প বিভিন্নভাবে দূষিত করছে মাটি, পানি, বায়ু, নদীসহ ভূগর্ভস্থ পানিও। বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) বিভিন্ন গবেষণা থেকে দেখা যায় যে মোট বায়ুদূষণের ৫০ শতাংশেরও বেশি, নদীদূষণের প্রায় ৬০ শতাংশ এবং শব্দদূষণের প্রায় ৩০ শতাংশ শিল্প-কারখানা থেকে সৃষ্ট।